Tuesday, October 28, 2025

মুক্ত লেখনী

প্রধান ম্যেনু

সাহিত্য পত্রিকা

বদলে যাওয়া ঈদের গল্প

স্বাগতা, সন্ধি, সভ্যতা—একনিশ্বাসে বলে ফেলার মতো এই তিনটি নাম। আলাদাভাবে নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁরা স্বনামে প্রতিষ্ঠিত হলেও মঞ্চে একসঙ্গে প্রায়ই দেখা যায় তাঁদের। হয়তো নিজেদের একনিশ্বাসে বাঁধতে ভালোই লাগে তাঁদের। পরিচিত এই তিন ভাইবোনের ঈদের দিনগুলোও কি এমন একই সুতায় গাঁথা থাকে? নাকি দিনটা কাটে বিচ্ছিন্ন? উৎসবের সেই দিনগুলোর কথা জানতেই তাঁদের পরিবারসহ বসা হয় এক আড্ডায়। এই পরিবারের ঈদ কাটে কীভাবে?

তিন ভাইবোনের ঈদের গল্প শুনব, এই ভেবেই সকাল সকাল ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে স্বাগতা, সন্ধি, সভ্যতাদের বাড়ি যাওয়া। কিন্তু তাঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল গল্পটা তো তিনজনের নয়, আরও অনেকেই সেই ঈদের গল্পের অপরিহার্য চরিত্র। তাঁদের মধ্যে খালাতো বোন স্বর্ণা আর স্বীকৃতি তো তাঁদের গল্পে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে। আর বছর দুয়েক ধরে সংগীতশিল্পী খৈয়ম সানু সন্ধির জীবনে ঊর্মি আসার পর থেকে ঈদের গল্পগুলো যেন আরও প্রাণ পেয়েছে। কারণ, তাঁদের মেয়ে সংস্কৃতিকে ঘিরেই এখন তাঁদের প্রতিটি দিন উৎসবমুখর। তবে একটা শূন্যতা এত উৎসব-আনন্দের সঙ্গে কাঁটার মতো খচখচ করে। তাই তো বাড়ির সবচেয়ে বড় সদস্য, অর্থাৎ স্বাগতা-সন্ধি-সভ্যতার মা ফরিদা ইয়াসমিন, খুব প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেও হারিয়ে যান পুরোনো স্মৃতিকথায়। যে সময় বেঁচে ছিলেন তাঁর স্বামী সংগীতজ্ঞ খোদা বক্স। কাছের মানুষেরা যাঁকে সানু নামে চেনে।

তিন বছর ধরে একটু একটু করে বদলে গেছে স্বাগতা-সন্ধি-সভ্যতাদের ঈদ। ২০১৪ সালে বাবা খোদা বক্সের মৃত্যুর পর থেকে বদলে যাওয়ার শুরু। আগের দিনগুলোর কথা উঠতেই ছোটবেলার চাঞ্চল্যে ফিরে যান অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী স্বাগতা। বলেন, ‘আমার বাপির (বাবা) একটা ভেসপা বাইক ছিল। প্রতি ঈদেই আমরা ভাইবোনেরা পাঁচ-ছয়জন (খালাতো বোনেরাসহ) মিলে সেই ভেসপায় চেপে বসতাম। বাপি আমাদের সব্বাইকে নিয়ে তখন দিনভর আত্মীয়দের বাসায় ঘুরে বেড়াতেন।’

একটা ভেসপা গানের শিল্পী সভ্যতাও চালান। তবে দুর্ঘটনায় পড়ে পায়ে আঘাত পাওয়ায় আপাতত চালক সভ্যতা যাত্রী হয়ে গেছেন। তবে নিজের ভেসপা চালানোর অভিজ্ঞতা থেকেই বললেন, ‘বাপি যে কীভাবে এতগুলো বাচ্চা নিয়ে বাইক চালাতেন, এটা তিনিই জানতেন!’
একটা ঈদের স্মৃতি মনে পড়ল সন্ধিরও। সেটাও তাঁদের বাপিকে ঘিরে। সেটি ঈদের নামাজের কথা। প্রত্যেক ছেলের মতো সন্ধিরও বাবার হাত ধরে ঈদগাহে যাওয়ার স্মৃতিটা খুব প্রিয়। কিন্তু তিন বছর ধরে সেই মুহূর্ত শুধু স্মৃতিতেই বন্দী হয়ে থাকে।
বাপির গল্প বলতে গিয়ে দেখা গেল তিন শিল্পীর মায়ের মুখে ভর করেছে বিষণ্নতা। তাই ছেলেমেয়েরা মায়ের হাসি ফিরিয়ে আনার জন্য ছোট্ট সংস্কৃতিকে যে বাহানায় হাসায়, সেভাবেই তিনজনে মিলে বলে উঠল, ‘মা, একটু হাসো তো দেখি!’
সংস্কৃতির কথা উঠতেই দেখা গেল বাবার পর এই সংস্কৃতিই এখন তাঁদের সব আনন্দ, উৎসব আর উদ্যাপনের মধ্যমণি। ঈদের দিন এখন সংস্কৃতির রঙে রঙিন। সংস্কৃতির মা, অর্থাৎ বাড়ির বউ ঊর্মি নূর বিনতে গিয়াস এই পরিবারে আসেন ২০১৫ সালে। তাঁর বদলে যাওয়া ঈদও এখন সংস্কৃতিময়। গত দুটো ঈদে সংস্কৃতি খুব ছোট। সে কী পরবে, কীভাবে সাজবে, কোন পোশাক কখন পরবে—এসব ভাবতে ভাবতেই মা ঊর্মির ঈদ কেটে যাচ্ছে। তবে এই ব্যস্ততা যে আর সব ঈদে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেয়ে সুখকর ছিল, তা ঊর্মির গল্প বলার অভিব্যক্তিতেই স্পষ্ট। মায়ের উচ্ছ্বাস তাঁর চোখে জ্বলজ্বল করছিল।

এবার স্বাগতার বদলে যাওয়া ঈদের গল্প বলি। ২০১৫ সালে চিত্রগ্রাহক রাশেদ জামানের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন এই অভিনেত্রী। এরপর শ্বশুরবাড়িতে কাটানো ঈদগুলো তাঁর জীবনে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার অধ্যায় খুলতে শুরু করে। স্বাগতা বাড়ির বড় বউ, তাই বিয়ের পর থেকে দায়িত্ব পালনের পরীক্ষায় পাস করার একটা চাপে তিনি থেকে আসছেন। এই অভিনেত্রী-বউ একাধারে রাঁধেন, চুল বাঁধেন, অভিনয় করেন, গান করেন, নিজ সংসার সামলান, আবার ভাইবোনদের সঙ্গে ঈদ কাটাতেও চলে আসেন। রীতিমতো বিয়ের পরে ঈদগুলো যেন একটা রোলারকোস্টারে চড়ার মতো অনুভূতি নিয়ে শুরু আর শেষ হয়!

তবে সভ্যতা এখনো এসব শ্বশুরবাড়ি, ঘর-সংসারের সামলানোর চাপমুক্ত। বাড়ির ছোট মেয়ে হওয়ার এই এক সুবিধা। আরও একটা সুবিধা আছে। কী সেই সুবিধা? জবাব দিলেন সভ্যতা। বললেন, ঈদের দিন মা বকা দেন না। এই দিন ‘বকা’র ছুটি!

তাহলে ঈদের দিন যে যাঁর মতো ব্যস্ত? এখন আর একসঙ্গে বসার জো নেই? না না, ব্যস্ততা যতই থাকুক, ঈদের একটা সময় সবাই এক হয়ে বসা তো হয়ই। ঈদ বলে কথা।

অন্যরা এখন যা পড়ছেন

আধুনিকতা কি আসলে?

নাজমীন মর্তুজা : যখন একা থাকি, নিজের সৃষ্টি শীলতার যত্নে থাকি, তখন জীবন ব্যবহারে মানুষের রীতি ধরণ, আমাকে বরং প্রহতইবিস্তারিত পড়ুন

কোন এক বাবাকে : স্মৃতিময় দিনগুলো

বিস্তৃত জীবনের উপাখ্যান নিয়ে গড়ে ওঠে প্রতিটি উপন্যাসের পটভূমি। জীবনের নানা বাঁক বদলের গল্প এতে প্রতিফলিত হয়। ফলে পাঠক নিবিষ্টবিস্তারিত পড়ুন

হেমন্ত আনে প্রাণের উৎসব : মঈনুল হক চৌধুরী

ষড়ঋতুর দেশ আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত নিয়ে আমাদের ষড়ঋতু। ঋতু বদলের পালায় আবার আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন